সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:২৭ পূর্বাহ্ন
মাসুদ রানা- সিরাজগঞ্জ জেলা প্রতিনিধিঃ
শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশনা উপেক্ষা ও অনিয়ম করে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার ২নং বাগবাটি ইউনিয়নের গাড়ুদহ শিশু সদন উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি গঠনের অভিযোগ উঠেছে বিদ্যালয়ের সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
শিক্ষা বোর্ডের গঠনতন্ত্র উপেক্ষা এবং আইন লংঘন করে পছন্দের লোকজন দ্বারা একটি পকেট কমিটি গঠন করায় ওই এলাকাবাসী, শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের মাঝে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে।
গোপনে পকেট কমিটি করায় ওই বিদ্যালয়ের এক ছাত্রের অভিভাবক বাবলু শেখ জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর একটি অভিযোগ প্রদান করেছেন।
এদিকে, গাড়ুদহ শিশু সদন উচ্চ বিদ্যালয়ে অভিভাবক সদস্য হয়েছেন পাড়া প্রতিবেশী বানানো চাচা ৯ম শ্রেণীর ছাত্রী রুমানা খাতুনের চাচা মতিয়ার রহমান, ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী ফারিয়া খাতুনের চাচা সামছুজ্জোহা, ৯ম শ্রেণীর ছাত্র জিসানের চাচা লুৎফর রহমান, ৭ শ্রেণীর ছাত্রী সিনহার চাচা আব্দুল্লাহ আল-হারুনের নাম উল্লেখ করে পকেট কমিটি গঠনের পর থেকে বিদ্যালয়ের প্রকৃত ছাত্র-ছাত্রীর পিতাদের কমিটিতে না রাখায় অভিভাবকরা তা অবিলম্বে বাতিল করে নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে যথাবিহিত ব্যবস্থা গ্রহণ এবং অনিয়ম তদন্তে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার, জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়- সদর উপজেলার বাগবাটি ইউনিয়নের ফুলজোড় গ্রামের গাড়ুদহ শিশু সদন উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটি না থাকায় অ্যাডহক কমিটি গঠন করা হয়।
অ্যাডহক থাকাকালীন অ্যাডহক কমিটির সভাপতি, প্রধান শিক্ষকসহ একটি প্রভাবশালী মহলের যোগসাজশে কমিটি গঠনের নির্দেশনার সকল নিয়মকে উপেক্ষা করে অতিগোপনে নির্বাচন প্রক্রিয়ারকে গোপন রেখে নির্বাচনের বিধান ভঙ্গ করে, তফসিল, মনোনয়ন এবং নির্বাচনের সার্বিক বিধান অমান্য করে সম্প্রতি ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আব্দুল বাতেন ও প্রধান শিক্ষক আল-আমীন মন্ডল এলাকার একটি প্রভাবশালী মহলকে নিয়ে গোপনে একটি পকেট কমিটি গঠন করে বোর্ডে জমা দেন।
কমিটি গঠনের পর থেকে বিষয়টি গোপন রাখা হয়। এই কমিটির স্বচ্ছতা প্রমাণের জন্য কমিটি গঠনের কিছুদিন পর বিদ্যালয়ে গোপনে মিটিং করে।
বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকার অভিভাবকরা বলেন- সভাপতিও প্রধান শিক্ষক কমিটি গঠনের বিষয়টি গোপন রেখে নির্বাচন এবং নির্বাচনের বিধি-বিধান ব্যতিরেকেই কমিটি গঠন করে অভিভাবকদের সঙ্গে, এমনকি বিদ্যালয়ের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন।
আমরা এর তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানাই।প্রধান শিক্ষক আল-আমীন মন্ডল বলেন- সভাপতির সাথে কথা বলে কমিটি গঠন করা হয়েছে। সভাপতি যে নিয়মে কমিটি গঠন করতে বলেছে সেই নিয়মে কমিটি গঠন করা হয়েছে।
পাড়া-প্রতিবেশী ভাতিজি-ভাতিজাদের দিয়ে কমিটিতে অভিভাবক সদস্য হয়েছে এবিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাদের রক্তের কোন সর্ম্পক নেই।
কেউ যদি বলে ঐ ছলে বাবা মেয়ের অভিভাবাক মতিয়ার রহমান, সামছুজ্জোহা, লুৎফর রহমান, আব্দুল্লাহ আল-হারুন তাহলে আমরা কি করবো। এই নিয়মে তাদের কমিটিতে রেখে গঠন করেছি।
গাড়ুদহ শিশু সদন উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আব্দুল বাতেন বলেন- আমি কমিটি গঠনের যথারীতি নিয়ম মেনে কমিটির প্রতিবেদন দিয়েছি। এখানে ভালো লোক ও শিক্ষিতদের নেওয়া হয়েছে। চার জন অভিভাবকহীন সদস্য নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কথা না বলে ফোন কেটে দেয়।
এ বিষয়ে ইউপি সদস্য আব্দুল মান্নান জানান- কবে কখন এই কমিটি হয়েছে আমি শুনি নাই।
এ বিষয়ে জেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ শফীউল্লাহ বলেন- কমিটি গঠনে অনিয়মের অভিযোগের বিষয়ে আমার কাছে তেমন কোনো তথ্য নেই। তবে অনিয়ম হলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অভিযোগ দিয়েছে কিনা আমাকে দেখতে হবে। সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা (ভারপ্রাপ্ত) নির্বাহী অফিসার এসএম রফিকুল ইসলাম বলেন- এবিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের ভিক্তিতে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।